২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি অভিযোগ উঠেছে। চারুকলা অনুষদের এর গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন চারুকলার অনুষদের একাধিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ সেলে আজ বুধবার দুপুরে অনুষদের ভুক্তোভোগী ছাত্রীরা এ অভিযোগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক তাদের যৌন হয়রানি ও মানসিক উত্যক্ত করে আসছেন বলে তারা অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। লায়লা আরজুমান বানু বলেন, ‘চারুকলা অনুষদের ছাত্রীদের কাছ থেকে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।’ এদিকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আমরা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও মানুষিকভাবে উত্ত্যক্তের শিকার হই। যার কারণে আমরা মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছি। পড়াশুনা এবং অন্য কোনো কাজেই মনযোগ দিতে পারছি না।’ অভিযোগপত্রে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা আরও উল্লেখ করেন, ‘কারণে অকারণে স্যার আমাদেরকে বিভিন্ন কুরচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য করে। অফিসে ডেকে বসিয়ে রাখেন। ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে নানা রকম ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলেন। অনেকসময় সবার সামনে গায়ে হাত দেন। অন্য নারী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন।’ এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষক অনুষদের একাধিক ছাত্রীর সামনে মেয়েদের শরীর সম্বন্ধীয় ব্যাপারে ইঙ্গিত করে নানা অশালীন কথাবার্তা বলা ও কোর্সের নম্বরের কথা বারবার উল্লেখ করে শিক্ষকের ক্ষমতা দেখাতেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা এবং বিভাগের সভাপতির কাছে এর আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিক যৌন হয়রানির অভিযোগ এসেছিল। অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী এক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি আর মানসিকভাবে সহ্য করতে না পেরে অভিযোগ করেছি। আমি চাই না ওই শিক্ষক আমাদের সাথে এমন আচরণ করুক। আমি নায্য বিচার চাই। এ বিষয়ে ভুক্তোভোগী কয়েকজন ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা স্যারের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আসছি। আমরা স্যারকে দেখলে রীতিমত ভয়ে থাকি। ওনি বিভিন্ন জায়গায় সবার সামনে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে হেসে ওঠেন। আবার মাঝে মাঝে আমাদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করেন। এ সম্পর্কে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জেনে কোন মন্তব্য করতে পারবো না।’ এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গিয়েছে।  

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ